নৃবিজ্ঞান কী?
একেবারে সাদামাটা ভাষায় নৃবিজ্ঞান মানুষের বৈচিত্র্যকে অধ্যয়ন করে।
নৃবিজ্ঞান বললে আক্ষরিক অর্থে বোঝায় মানুষ সম্পর্কিত বিজ্ঞান। তাহলে এটি মানুষের কী নিয়ে অধ্যয়ন করে? মানুষের শরীরের আকার-আকৃতি গঠন? মানুষের ভাষা? মানুষের খাবার? মানুষের মন নাকি মানুষের বানানো টেকনোলজি?
সত্যি বলতে যখন আপনি নৃবিজ্ঞানের চশমাটা পড়ে নিবেন তখন আপনি নৃবিজ্ঞানী হয়ে মানুষের যেকোন বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণা করতে পারেন। তার মানে নৃবিজ্ঞান হলো বিশেষ একটি চশমা যে চশমা পড়লে আপনি দেখতে পারবেন দুনিয়াটা শুধু একটি আদর্শ দিয়ে পরিচালিত না। সেখানে রয়েছে বৈচিত্র্য। এবং সবকিছুকে অসংখ্য দিক মিলিয়ে দেখলে একটা কিছু দাঁড়ায় যেমন আপনারা অনেকেই অন্ধের হাতি দেখার গল্পটি জানেন। নৃবিজ্ঞানের কিছু বিশেষ দেখার দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। যেমন কোন বিষয়কে সেই বিষয়ের যতদিক থেকে চিন্তা করা যায় সেই সকল কিছু মিলিয়ে দেখা।
মানুষের দৈহিক গঠনের বৈচিত্র্য যেমন নৃবিজ্ঞান অধ্যয়ন করে থাকে তেমনি মানুষের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, ভাষাগত বৈচিত্র্য সবমিলিয়ে বললে দুনিয়ায় কতরকমভাবে “মানুষ” হওয়া যায় নৃবিজ্ঞান তা-ই অনুসন্ধান করে থাকে।
শুধুমাত্র বর্তমানকালেই নয় অতীতের মানুষ, তাদের সমাজ নিয়েও চর্চা করা হয় এখানে। আপনারা প্রত্নতত্ত্বের নাম শোনে থাকবেন। বাংলাদেশের যে ক’টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় সেগুলো প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিকদেরই অনুসন্ধান। আর এই প্রত্নতত্ত্ব নৃবিজ্ঞানেরই একটি শাখা। আমরা সবাই জানি যে সেসব স্থাপনা বা সে সময়কার নানান বাসন-কোসন, কাপড় ইত্যাদি থেকে আমরা তখনের মানুষরা কী ব্যবহার করতেন, কেমন ছিল তাদের সমাজ তা জানতে পারি।
আবার ডিনএ টেস্ট, জিনের বিবর্তন ইত্যাদি সম্পর্কেও সকলেই পরিচিত কমবেশ। এই বিষয়গুলোই পড়া হয় Biological anthropology তে।
এছাড়া ভাষাগত নৃবিজ্ঞান, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান, সবমিলিয়ে মোটাদাগে নৃবিজ্ঞানের এই চারটি ভাগ। এছাড়া আরও অনেক শাখা প্রশাখা, অনেক থিওরী, মেথড ইত্যাদির সমন্বয় হলো নৃবিজ্ঞান।